ADS

ঈশান পুরের আতঙ্ক( পর্ব-2)


    ঈশান পুরের আতঙ্ক( পর্ব-2)                             জিৎ বাগ

                                

যে কেউ দেখলে প্রথম এই মূর্তি দেখে ভয় পেয়ে যাবে। তবে আজ মন্দিরে নাকি রাত্রে গ্রামেএকটি সবার আয়োজন করা হয়েছে।  একদল মানুষ মন্দির এর কাছে একটি পুরানো বটগাছের নিচে বসে এই নিয়ে আলোচনা করছে। তবে ভৈরব কোন বিষয়ে কান দিয়ে মন্দিরের গর্ভ গৃহে গিয়ে কিছু যেন ভাবছিল। হঠাৎ সে মন্দিরের বাইরে এসে আমাদেরকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা বলল।আমি তার এইরকম আচরণ অবাক হয়ে গেলাম কারণ সেই ঘুরতে যাবে বলে বায়না ধরেছিল। এখন সেই বলছে বাড়ি ফিরে যেতে তবে কুন্তলা রাজি হয়ে গেল। তবে রাস্তায় আস্তে আস্তে এই সভার বিষয় কি তা নিয়ে কিছু একটা আন্দাজ করতে পারলাম গ্রামে রাস্তায় রাস্তায় ছেলে বউ সবার মুখেই কার যেন একটা নাম সবাই যেন ভাবে বলছে সে ফিরে আসবে। ফিরে আসবে তবে এইসব শুনে কুন্তলার কপালে ভাঁজ ফুটেছে আর ভৈরবের মুখে হাসি ফুটেছে এই দুজনের দুই কীর্তি দেখে আমি এখন ভাবি যে আমি কি করি যাইহোক আমরা বাড়ি ফিরে এলাম দুপুরের মধ্যাহ্নভোজন ছেড়ে ছেড়ে যেহেতু শীতকাল বাড়ির উঠানে একটি লেবু গাছের নিচে আমরা বসে আছি। লেবু গাছের পাতা নেই বললেই হয় তাই রো দেশে আমাদের গায়ে পড়ছে এবং আমরা পুরানো দিনের কিছু স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করছি হঠাৎ ভৈরব বলে উঠলো আচ্ছা আপনাদের যে মন্দিরটা আছে তার সামনে রাখা তিরশুলটির চারিপাশে গোল করে বৃত্তের ন‍্যায় চারদিক বরাবর যে চারটি ত্রিশূল পোঁতা আছে। তার দুটি কিন্তু মাটিতে পড়ে গেছে আর দুটি দাঁড়িয়ে আছে এইরকম কেন। এই প্রশ্নটা যেন একটু বিদঘুটে প্রশ্ন হয়ে উঠল ওই সময় কারণ আমরা কি বিষয়ে কথা বলছিলাম আর ও কি বিষয়ে প্রশ্ন করল কোন সম্বন্ধই নেই কিন্তু এই প্রশ্নটা শুনে সবার মুখে যেন চিন্তার ভাঁজ তারা এতদিন ধরে যে সমস্যার কথা বলে আসছিল যেন এটাই তার কারণ।




মেসোমশাই বললেন আজ থেকে প্রায় অনেক বছর আগে আমাদের গ্রামে এক তান্ত্রিক ছিল সে নানা রকম তন্তবিদ্যায় সিদ্ধ ছিল কিন্তু সে তা মানুষের ভালো কাজে কোনদিনই লাগায়নি। সব সময় মানুষের অনিষ্ট করে বেড়াতে। এবং তারই মেয়ে সঞ্চিতা বাবার কাছ থেকে নানা তন্ত্র বিদ্যা শিখে আরো বড় তন্ত্র ভৈরবী হয়ে উঠল। সে গ্রামের এক ছেলে রঘুবীর কে ভালোবেসে ফেলে। কিন্তু ছেলেটি তাকে একদমই পছন্দ করত না তাই ছেলেটিকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনবে বলে সে ডাকিনী তন্ত্ শুরু করে।এই মহা ভয়ংকরী সাধনা সে গোপনে পাশের জঙ্গলে  শুরু করে। প্রথমদিকে গ্রাম থেকে কারো পোষাবেড়াল কিংবা ছাগল এই সকল পশু গায়েব হতে লাগলো। কিন্তু মানুষ আতঙ্কিত হল সেই দিন যেদিন গ্রামের এক কিশোর ওই জঙ্গলের দিকে গরু চড়াতে গিয়ে আর ফিরে আসে না। তারপর এক এক করে কত কিশোর কিশোরী গায়েব হতে লাগলো এই সব দেখে এই গ্রামের জমিদার খোঁজ খবর চালাতে শুরু করে তন্ন তন্ন করে শুরু করে। কিন্তু কোথায় খুঁজে পাওয়া যায় না। অবশেষে কিছু উপায় না পেয়ে তিনি এক তার গুরুদেব কে এই ঈশানপুর গ্রামে আসার নিমন্ত্রণ জানালেন। গুরুদেব এসে বিভিন্ন সাধনার মাধ্যমে জানার চেষ্টা করেন এর কারণ কিন্তু কোনভাবে তিনি তা বুঝতে পারেননি। কারণ এই সকল জিনিস গ্রামেই হচ্ছিল না হচ্ছিল জঙ্গলে তাই যেহেতু তিনি জঙ্গলের দিকে লক্ষ্য করেননি তাই তিনি জানতেও পারেননি। রাত্রে শোবার ঘরে হঠাৎ গুরুদেব লক্ষ্য করেন যে কোন এক অশরীর তার দিকে চেয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে তিনি তা দেখে তৎক্ষণাৎ নিজের দেহবন্ধন করে তার দিকে প্রশ্ন তুললেন কে তুমি? এখানে কি করতে এসেছ  কেন তুমি এই গ্রামে মানুষগুলো মেরে ফেলছো। গুরুদেব হয়েছিলেন এই অশরীর কাজই হল এই শিশুগুলোর হত্যা কিন্তু গুরুদেবকে হত্যা করার জন্যই যে এই অসুখীকে ওই তান্ত্রিক পাঠিয়েছিল তা তিনি বুঝতে পারেননি। কিন্তু দেওবন্দন করে রাখা হয় না। গুরুদেব কোন কিছু না ভেবেই তার গলায় থাকা রুদ্রাক্ষের মালাটি ছুড়ে দিলেন অশরীর দিকে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ